বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর দলীয় নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্খীদের আনন্দ যেন থামছেই না। আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের শপথ সম্পূর্ণ করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের কথা অঙ্গীকারে রয়েছে। এছাড়া সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আছে সরকার।
দশম সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত সারাদেশ ব্যাপী যে নাশকাতা ও অগ্নি সন্ত্রাস চালিয়ে ছিল, তা যে এবার হচ্ছে না তা সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে আওয়ামী লীগে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের।
পুনরায় দায়িত্ব প্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জান খান কামাল দায়িত্ব গ্রহণের পরই বলেন, সরকারের সমালোচনা করার অধিকার সকলের রয়েছে। কিন্তু ২০১৪ সালের ন্যয় নৈরাজ্য ও নাশকতা বরদাশত করা হবে না।
বিএনপি ইতোমধ্যে নির্বাচন বাতিল চেয়ে আইনের দারস্ত হয়েছে এবং বিদেশি কূটনীতিকদের কাছেও দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে এই নির্বাচনে মাধ্যমে বর্তমান সরকার জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে।
সদ্য গঠিত মন্ত্রিসভা নিয়ে কথা বলা হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব।
বিএনপির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে আন্দোলনের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামালের বাসায় বেশ কয়েক দফা মিটিং হয়েছে। তারা অতিশীঘ্রই আন্দোলনের ডাকা দিবে বলি জানা গেছে।
কী এমন হয়েছে যে রাতারাতি সরকার গঠন করতে হয়। তারা জানে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। তাদের (আওয়ামী লীগ) উদ্দেশ্য ভাল নয় দাবি বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর।
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এরই মধ্যে বলেছেন, একাদশ জাতীয সংসদ নির্বাচনে সকল দল সমান সুযোগ পায়নি, তা দৃশ্যমান ছিল। কাওকে পুকুরে সাতার কাটতে দিয়েছে সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে অপরজনকে হাত-পা বেঁধে, এমন অবস্থায় আর যাই হোক প্রতিযোগিতা মূলক খেলা এটাকে বলা যাবে না। সদ্য নির্বাচনকেই ইঙ্গিত করেই তিনি এ কথা বলেছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজনৈতিক আন্দোলন হলে রাজনৈতিকভাবেই তা মোকাবেলা করা হবে। তবে সহিংসতা ও নাশকতা করলে সময়োচিত জবাব দেয়া হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা আন্দোলনে পরাজিত, নির্বাচনেও পরাজিত তাদের নতুন কিছু করার আছে বলে কেউ বিশ্বাস করবেনা। এমনকি বাংলাদেশের জনগণও বিশ্বাস করেনা, আমরাও করিনা। তারা যদি আইনি পথে যায় তাহলে আমলা লিগ্যাল ব্যাটল করবো, যদি রাজনৈতিক আন্দোলনে যায় তাহলে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে। তারা যদি সহিংসতা ও নাশকতার পথে যায় তাহলে পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সময়োচিত জবাব দেয়া হবে।
তিনি বলেন, তারা বিগত বছরে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে, ১০ মিনিটও আন্দোলন করেনি। তারা আবার এখন কী করবে? এখন তারা নির্বাচনেও পরাজিত। আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনেও ব্যর্থ। তারা ভবিষ্যতেও সফল হবে না।
দলীয় সূত্রে জানা গেছ, আওয়ামী লীগের আগাম সম্মেলনে কথা ভাবছেন দলটির শীর্ষ নেতা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নতুন নেতৃত্ব আনতে চান বলে শোনা যাচ্ছে যারা শুধু মাত্র দল পরিচালনা করবেন। সরকারের মাঝে যেন দলটি না হারিয়ে যায় সে জন্য এ ব্যবস্থা।
আবার অনেক নেতা বলছেন, যারা মন্ত্রণালয়ে নাই তারা দল পরিচালনা করবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমনত্রী শেখ হাসিনা কাজ ভাগ করে দিবেন, কারা কী করবে।
বিশেষ করে বিরোধীপক্ষ যদি নাশকতায় জড়ায় তবে তাদের প্রতিহত করবে জনগণকে নিয়ে এমন সাংগঠনিক লোকদের রাখা হবে দলে এবং সরকার প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবে। বিএনপি যেন কোন অবস্থাতেই অস্থিরতা করতে না পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।